রবিবার, ২২ ডিসেম্বর ২০২৪, ০৯:৫০ পূর্বাহ্ন
শেখ মো.সোহেল রানা, মুন্সীগঞ্জ জেলা প্রতিনিধি, কালের খবর : মুন্সীগঞ্জ টঙ্গিবাড়ীতে বাবা মায়ের স্বপ্ন পূরণ করতে হেলিকাপ্টারে চড়ে বিয়ে করেছেন ইটালী প্রবাসী তুরজল মোল্লা। গতকাল বৃহস্পতিবার দুপুরে হেলিকাপ্টারে চরে কনের বাড়িতে যান তুরজল । এ সময় অসুস্থ বাবাকেও সাথে হেলিকাপ্টারে নিয়ে যান তিনি। তবে বাকি বর যাত্রীরা যান গাড়িতে চড়ে।
তুরজল মোল্লা মুন্সিগঞ্জের টঙ্গিবাড়ী উপজেলার আউটশাহী ইউনিয়নের কাইচাইল গ্রামের সোরহাব মোল্লার একমাত্র ছেলে। তার অপর ৪ কন্যা রয়েছে। তুরজল মোল্লা একমাত্র ছেলে সন্তান হওয়ায় ছোট বেলা হতেই তার বাবা মা তাকে খুব আদর করতো। তুরজল যখন ছোট ছিলো তখনি বাবা মায়ের স্বপ্ন ছিলো ছেলেকে হেলিকাপ্টারে চড়ে বিয়ে করাবেন। বাবা অসুস্থ হয়ে শয্যাশায়ী । ঠিকমতো কথাও বলতে পারেন না। বাবার সেই স্বপ্ন পূরণ করতেই হেলিকাপ্টারে চড়ে বাবাকে সাথে নিয়ে পাড়ি জমান পাশের লৌহজং উপজেলার খিদিরপাড়া ইউনিয়নের হুগলি গ্রামে।
কনে ওই গ্রামের আওলাদ সেখের মেয়ে সানদিয়া ইসলামক । দুপুরে বর যখন হেলিকাপ্টারে চড়েন তখন আশেপাশের এলাকার মানুষের ভিড় জমে। বিয়ে শেষে পাত্রী নিয়ে ফিরেন বিকাল ৫ টার। তখন হাজারো ঔসুক জনতা হেলিকাপ্টার দেখতে ভিড় জমায়।
হেলিকাপ্টারটি বিকাল ৫ টায় তুরজল মোল্লাদের বাড়ির সামনের পরিত্যক্ত কৃষি জমিতে নামলে হেলিকাপ্টারটি দেখার জন্য পাশের রাস্তাসহ চারপাশে হাজারো জনতা ভিড় জমায়। এছাড়া আশে পাশের ভবনগুলোর ছাদেও উঠে নারী ও পুরুষরা হেলিকাপ্টারটি দেখতে থাকে। ৫টা ১০ মিনিটের দিকে তুরজল মোল্লা ও সানদিয়া দম্পত্তি হেলিকাপ্টার হতে নেমে আসলে লোকজন ঘিরে ধরে তাদের ।
এ সময় মোবাইল হাতে অনেকে হেলিকাপ্টার ও বর কনের ছবি নিতে ব্যস্ত হয়ে পরে।
হেলিকাপ্টারে চড়ে বিয়ে দেখতে আসা কাইচাইল গ্রামের জয়নাল হালদার (৭৫) জানান, আমি কখনো বাস্তবে এতো সামনে হতে হেলিকাপ্টার দেখিনি। তাই দেখতে এসেছি। তাছাড়া হেলিকাপ্টারের পাখা যখন ঘুরে তখন চারপাশে এতো বাতাস বয়ে যায় তা আজ না দেখলে আমার বিশ্বাস হতো না।
এ ব্যপারে বর তুরজল মোল্লা জানান, আমরা চার বোন এবং আমি একাই ভাই। আমার বাবা মা আমাকে অনেক আদর করতো । তারা চাইতো আমি হেলিকাপ্টারে চড়ে বিয়ে করি। বর্তমানে আমার বাবা অসুস্থ বিছানায় শয্যাসায়ী তার ইচ্ছায় আমি হেলিকাপ্টারে চড়ে বিয়ে করেছি। সে আরো জানায়, ৪ ঘন্টার জন্য ১ লক্ষ ২০ হাজার টাকায় ভাড়া করে আনি হেলিকাপ্টারটি। কিন্তু কন্যাকে গিয়ে নিয়ে আসতে ৪ ঘন্টা সময় লাগেনি।
এ ব্যাপারে আউটশাহী ইউনিয়ন ৯নং ওয়ার্ড আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক কাইচাইল গ্রামের আনোয়ার হোসেন সেখ জানান, তুরজল খুব ভালো ছেলে। ওকে ছোটবেলা হতেই আমি চিনি ও জানি। দির্ঘ প্রায় ১০ বছর যাবৎ ও ইটালি প্রবাসি এবং ও ওই স্থানের সিটিজেন কার্ড প্রাপ্ত । ছুটিতে এবার দেশে এসে বিয়ে করলো। ওর বাবা মায়ের স্বপ্ন পূরণ করতেই হেলিকাপ্টারে চড়ে কন্যা নিয়ে আসে।